খারাপ সময়ের মোকাবিলা কিভাবে করতে হয়? জীবনে খারাপ সময় আসা দরকার
মানুষের জীবন গতিশীল। জীবনে সব সময় ভালো সময় থাকে না। জীবনে খারাপ সময়ের সম্মুখীন মানুষকে হতে হয়। ভালো খারাপ নিয়ে আমাদের জীবন। তাই আমাদের জীবনে যেমন ভালো সময় আছে তেমনি খারাপ সময়ও আসে। খারাপ সময় আসলে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। খারাপ সময়ে আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্য ধারণ করলে আপনার জীবনের খারাপ সময়গুলো চলে গেছে আর ভালো সময় আপনার জীবনে চলে এসেছে। খারাপ সময় আসলে ধৈর্য ধারন করে জীবনে সাথে লড়াই করে সামনের দিকে এগিয়ে যান দেখবেন আপনি সফল হয়ে গেছেন। আর যদি ধৈর্যধারণ করতে না পারেন তাহলে আপনি ব্যর্থ।
জীবনে খারাপ সময় মোকাবিলা কিভাবে করতে হয়?
প্রতিটি মানুষের জীবনেই কখনো না কখনো খারাপ সময় আসে। জীবনে খারাপ সময়টুকু ঐ মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। এই সময়টাতেই আমরা মানুষ চিনতে পারি। বিপদে যাদের কাছে সাহায্য পাওয়া যাবে ভেবে সাহায্য চাওয়ার পর পাওয়া না গেলে ভেঙ্গে পড়া চলবে না। সেই সময় মনকে শক্ত রেখে নিজের কর্মদক্ষতার উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে হবে। কারো উপরে ভরসা না করে নিজেকে শান্ত রেখে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নিজের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে হবে। তাহলে দেখবেন আপনি খুব সহজেই খারাপ সময়গুলো কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
জীবনে খারাপ সময় আসলে প্রকৃত মানুষ চেনা যায়। এজন্য একজন মানুষের জীবনে খারাপ সময় আসাটা খুবই প্রয়োজন। জীবনে খারাপ সময় আসলে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে এবং কর্মদক্ষতার উপর আস্থা রেখে তা মোকাবিলা করতে হবে। তাহলে দেখবেন খুব সহজেই তা পার করে আবার স্বাভাবিক জীবনে চলে এসেছেন। খারাপ সময় কে ভালোবাসুন, শ্রদ্ধা করুন, সময়ের ওফোড় গুলো হজম করতে শিখুন। খারাপ সময় থাকবেনা। সময় পরিবর্তনশীল । তবে খারাপ সময় আপনার চোখে আঙ্গুল দিয়ে মানুষ নামক মুনাফিক প্রাণীগুলোকে চিনিয়ে দিয়ে যাবে। যারা ভালোবেসেছিলো শুধু আপনার বর্ণিল জীবনকে সাদাকালো জীবনকে নয় ।
জীবনে খারাপ সময় আসা দরকার
খারাপ সময় মানুষের জীবনে আসা দরকার , খুব দরকার , ভীষণ দরকার । জীবনের একটা স্তরে অর্থনৈতিক মন্দা যাওয়াটাও ভীষণ প্রয়োজন ।সাফল্য অর্জনের দুর্গম পথ পাড়ি দেওয়ার সময় আমরা এমন অবস্থার সম্মুখীনও হই যখন আমাদের সাথে সব কিছু খারাপ হয়। অবস্থাটা খানিকটা এমন ’অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকিয়ে যায়’। জীবনের এই কঠিন সময়ে আপনি যদি নিজের প্রতি আস্থা রাখতে না পারেন তাহলে আপনি কঠিন সময় থেকে কখনোই বের হতে পারবেন না। খারাপ সময় আসবে আবার চলে যাবে। তাই ধৈর্য ধারণ করুন এবং লেগে থাকুন। জীবনে খারাপ সময় আসলে যে সমস্ত বিষয় সব সময় মনে রাখবেন-
ভালো করে ঘুমান
মানুষের জীবনে সময় খারাপ হলে ঘুম কম আসবে তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু তার জন্য ঘুম একেবারে ছেড়ে দিবেন তা করলে চলবে না। আপনাকে ঘুমাতে হবে। কঠিন সময় থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আপনাকে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। অনেক পরিকল্পনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর তার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের ঘুম খুবই প্রয়োজন। একজন সুস্থ্য মানুষের জন্য দৈনিক অন্তত ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। তাহলে আপনার শরীর আর মন দুইই ঝরঝরে থাকবে। তাই আপনার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম বিশেষভাবে প্রয়োজন।
রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন
খারাপ সময়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি যেটা হয় সেটা হল রাগ। রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তা আমাদের মানসিক কাঠামো ভেঙে দেয়। কথায় আছে, রাগ মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। রাগের মাথায় কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটার ফল কখনোই ভালো হয় না। রাগ ধ্বংস করে দিতে পারে জীবন, সম্পদ, সম্মান এবং পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক। তাই আপনি রাগ কমিয়ে ফেলুন। বরং রাগকে জেদে পরিণত করুন। এই জেদ আপনাকে সফলতা দিকে নিয়ে যাবে।
ভেবে চিন্তে পা ফেলুন
পরিকল্পনা কিন্তু সবচেয়ে বড় জিনিস। যেকোনো কাজ করার আগে আমাদের সকলেরই একটা পরিকল্পনা থাকা উচিত। আপনি যখন খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাবেন তখন আপনার মনে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন ও চিন্তা-ভাবনা ঘোরপাক খাবে। সে সময় আপনার মনের উপর বেশি চাপ দেবেন না। এক সঙ্গে অনেক কিছু ভেবে মনকে প্রেসার দেবেন না। বরং আস্তে আস্তে পরপর কি কি করা যায় তার একটি লিস্ট তৈরি করুন। সেগুলোকে ধীরে ধীরে ফলো করতে থাকুন। যেকোনো কাজ ভালো করে ভেবে করুন।
জীবনের একটা ভুল সিদ্ধান্ত আপনার জীবনকে তছনছ করে দিতে পারে। তাই যেকোনো কাজ করার আগে ভেবে চিন্তে পা ফেলতে হবে।
আবেগ ধরে রাখবেন না
আবেগ মানুষের একটি জটিল অনুভূতি। আমাদের সকল কাজ আবেগের অনুভূতিতে রঞ্জিত। নারীদের তুলনায় পুরুষদের নিজের আবেগ লুকানোর প্রবণতাটা বেশি দেখা যায়। পুরুষরা যত কষ্টই আসুক না কেনো তারা নিজের মধ্যেই চেপে ধরে রাখেন। এর ফলে মানসিক অসুস্থতা থেকে শুরু করে আত্মহত্যা পর্যন্ত গড়ায় এর পরিণতি। তাই কঠিন সময়গুলোতে নিজের আবেগ ধরে রাখবেন না। পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবের কাছে সাহায্য নিন। দেখবেন সময়ের সাথে সাথে আপনি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠবেন। তাই আপনাকে নিজের আবেগ না রেখে কাছের মানুষদের সাহায্য নিন।
নিজের প্রতি যত্নবান হতে হবে
আপনার সাথে যখন সবকিছু খারাপ হয় তখন নিজের প্রতি আপনি একটু যত্নবান হোন। কেননা এই খারাপ সময়ের সবটুকু আপনাকেই অতিক্রম করতে হবে। আর আপনি নিজেই যদি ঠিক না থাকেন তাহলে সময় শেষ হওয়ার আগেই হয়তো আপনি নিজেই শেষ হয়ে যাবেন। তাই ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করার পাশাপাশি বিশ্রাম করুন ও আপনার প্রিয় মানুষগুলোর সাথে সময় অতিবাহিত করুন।
খারাপকে মেনে নিতে শিখুন
মানুষের জীবনে ভাল এবং খারাপ দুই সময়ই আসে। তাই আপনাকে ভালোর পাশাপাশি খারাপকেও মেনে নিতে শিখতে হবে। আমরা সবাই ভালো সময়টাকে খুব সহজেই গ্রহণ করে থাকি। খারাপটাকে মেনে নিতে পারি না। তাই খারাপ সময় আসলে ভেঙ্গে না পড়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আপনি যত তাড়াতাড়ি আপনার খারাপ সময়টিকে মেনে নিতে পারবেন তা থেকে মুক্তি পাওয়া ততই সহজ হবে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত খারাপ মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলা।
শেষ কথা
জীবনের কঠিন সময় গুলোতে বা খারাপ সময় গুলোতে হতাশ হয়ে পড়লে বা ধৈর্যহারা হয়ে গেলে চলবে না। হতাশার ফলে জীবনের অনেক বড় ভুল সিদ্ধান্ত গুলো এই খারাপ সময় গুলোতে নিয়ে ফেললে, তার জন্য সারা জীবন আফসোস করেও কোন উপকার পাওয়া যায় না। তাই জীবনের খারাপ সময় গুলোতে ভেঙে না পড়ে আফসোস না করে কঠিন সিদ্ধান্ত গুলো নেওয়ার জন্য মনোবল রাখতে হবে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে সুখের সময় গুলো খুবই ক্ষণস্থায়ী হয় এবং দুঃখের সময় গুলো হয় দীর্ঘস্থায়ী। তারপরেও ভেঙ্গে না পড়ে সামনে দিকে এগিয়ে যান।
কথায় আছে ’যে সহে সে রহে’। জীবনের এক একটি খারাপ সময়কে আপনার জীবনের সাফল্যর একেকটা সিঁড়ি ভাবুন। দেখবেন আপনি খুব সহজেই খারাপ সময় পার করে দিতে পারবেন। মাঝে মাঝে খারাপ সময় জীবনের সেরা সময়ের পথ তৈরি করে দেয়।
# আপনি কি নিজের উপর বিশ্বাস রাখেন? নিজের উপর বিশ্বাস রাখো! # কিভাবে ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠা যায়? ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায়